https://public-voice24.com/wp-content/uploads/2022/03/favicon.ico-300x300.png
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৩শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বোরো চাষ কমেছে ফরিদপুরে

পাবলিক ভয়েস
মার্চ ৩, ২০২২ ১২:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

১০ বছরের মধ্যে চলতি বছর ফরিদপুরে বোরো ধানের চাষ কমেছে। জানা গেছে, চলতি বছর প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর চাষ কম হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের ভাষ্য, বোরো ধানের আবাদ কমলেও অন্য ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানি সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সেচ খরচ বেড়েছে। এতে চাষাবাদের অর্ধেক খরচ হচ্ছে শুধু সেচের পানি উত্তোলন করতে। আবার ধানের ভালো দাম না পাওয়ায় লোকসানের কারণে বোরো চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ফরিদপুরের অধিকাংশ কৃষকরা।

বোরো চাষিরা জানান, বোরো ধান চাষে সেচের খরচ বৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়তি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য কম। ফলে প্রতি বছরই জেলায় বোরো চাষের পরিমাণ কমছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরে ২০১০-১১ অর্থ বছরে জেলাজুড়ে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৪১৭ হেক্টর। এর বিপরীতে আবাদ হয় ৩৮ হাজার ছয় হেক্টর। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার হেক্টর।

বর্তমানে তা কমে চাষ হয় মাত্র ৭ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। বিপরীতে বোরো চাষ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদরের চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের চাষি, হামিদ মাতুব্বর, মোতালেব শেখ, করিম শেখসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েক বছর আগে সেচ মেশিন দিয়ে ঘণ্টায় যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা যেত এখন সেখানে তিন ঘণ্টায়ও সেই পরিমাণ পানি তোলা যায় না। এছাড়াও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট ও খরচও বেশি। উৎপাদিত ধানের দাম কাঙ্ক্ষিত না হওয়ায় বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন কমেছে।

নগরকান্দার আবুল কালাম, বোয়ালমারীর মোড়া গ্রামের রিপন টিকাদার জাগো নিউজকে বলেন, সেচ খরচ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ার কারণে বোরো ধান চাষ বাদ দিয়ে এখন অন্য ফসলের আবাদ করছি। যার কারণে মৌসুমে গম ও মসুরি ডালের চাষ বেড়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা এ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি বেশি ব্যবহারের ফলে গত কয়েক যুগ ধরে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। সেচের জন্য যদি কৃষকরা উপরিভাগের পানি ব্যবহার করেন তাহলে হয়তো ভূগর্ভস্থ পানির লেভেল ঠিক থাকবে।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পরিকল্পনা করতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. হযরত আলী জাগো নিউজকে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ধান চাষ করতে গেলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করতে হয়।

কিন্তু দিন দিন যে হারে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে তা কৃষির জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে আশার বিষয় এই যে, জেলায় বোরো ধানের আবাদ কমলেও অন্য ফসলের আবাদ বেড়েছে।