ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যে হতাহতের সংখ্যা বলা হচ্ছে তা রাশিয়ার বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কে যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা নিরুপণ এত কঠিন।
যে কোনও যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা সঠিকভাবে জানানোর ক্ষেত্রে প্রথম বাধা হলো স্বতন্ত্রভাবে যুদ্ধরত পক্ষের বক্তব্য যাচাই করা।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েই দাবি করেছে প্রতিপক্ষের কয়েকশ’ যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। মস্কো বলেছে, অভিযানে এখন পর্যন্ত তাদের প্রায় ৫০০ সেনা নিহত হয়েছে। ইউক্রেন নিজেদের বাহিনীর হতাহাতের কথা না জানালেও অন্তত ২ হাজার বেসামরিক রুশ হামলায় নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে।
এসব দাবির প্রতি কেন সংশয় থাকা উচিত?
যেকোনও যুদ্ধে তথ্যকে নিজেদের কৌশল হিসেবে কাজে লাগায় উভয় পক্ষ। এতে তাদের পক্ষে সমর্থন বা নিন্দা জানানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। ফলে এমন সময়ে যথেষ্ট ভুল তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে ইউক্রেন। তারা রাশিয়ার আক্রমণের ভয়াবহতা ও মানবিক দুর্ভোগ যত বেশি তুলে ধরা যায় সেই চেষ্টা করছে।
রাশিয়ার জন্য নিজেদের সেনা ও ইউক্রেনীয় নাগরিকদের ব্যাপক হতাহতের তথ্য যুদ্ধবিরোধী মনোভাব বাড়িয়ে দিতে পারে। যা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
তাহলে বিশ্বাসযোগ্য সূত্র কী?
জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থা প্রায় সময়েই বিভিন্ন সূত্র থেকে সঠিক সংখ্যা জানায়। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাদেরকেও সংকটে পড়তে হয়।
তাদের অনেক দলকে নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত হয় এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে হামলাস্থলে তদন্তকারী দল পাঠানোর সুযোগ থাকে না।
এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়ার পরই সংখ্যা প্রকাশ করে। এসব সূত্রের মধ্যে থাকে বেঁচে থাকা মানুষ, প্রত্যক্ষদর্শী, নিজেদের অনুসন্ধান এবং কর্তৃপক্ষ বা অপর সংস্থার প্রতিবেদন।
এই প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ এবং এ কারণেই জাতিসংঘের হতাহতের সংখ্যা সরকারের দেওয়া তথ্যের চেয়ে কম থাকে।
বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে ২২৭ জন বেসামরিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৫২৫ জন। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।