সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘সরকারি দলের লোকদের বলবো, ভালো হয়ে যান। ভোটাধিকার ফেরত দিন। দেশে যদি এত উন্নয়ন করেন তাহলে জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে ভয় পান কেন? কারণ উন্নয়নের নামে জনগণের পকেট কেটেছেন। উন্নয়নের নামে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। তাই জনগণের মন আজ বিক্ষুব্ধ, উত্তপ্ত। যেকোনও মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটবে। এই বিস্ফোরণ ঠেকিয়ে রাখার ক্ষমতা সরকারের নেই।’
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী যুবদল আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশের তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘প্রত্যেকটি জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন। করোনার কারণে শিল্প কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। বেকারত্ব বাড়ছে। নতুন কোনও শিল্পকারখানা নেই। মানুষের আয়ের, কর্মসংস্থানের কোনও ব্যবস্থা নেই। দিনমজুররা কাজ পায় না। বাজারে গেলে জিনিসপত্রের দাম এমন অবস্থায়–যেন একটা নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। সরকার নির্বিকার, তাদের কোনও দায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘সরকার মনে করে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণ নিয়ে বিশ্ববাসী ব্যস্ত, এই সুযোগে আরও কিছু অপকর্ম করি এবং পুলিশ বাহিনী মনে করছে তাদের ওপর আর কোনও নিষেধাজ্ঞা আসবে না। আসবে কী আসবে না তা জানি না। আমি বলবো, সোজা পথে সোজাভাবে চলুন। ভালো হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে, পোশাক পরে প্রফেশনাল গুন্ডা-মাস্তানের মতো যদি জনগণের মুখামুখি দাঁড়ান তাহলে দেশে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য। কারণ কেউ হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে না।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই ১০ লাখ কোটি টাকা যদি দেশে বিনিয়োগ হতো তাহলে অনেক শিল্প কারখানা হতো। অনেক রফতানিযোগ্য পণ্য উৎপাদিত হতো। কর্মসংস্থান হতো। তাহলে আমাদের যুব সমাজকে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরতে হতো না। দেশে যদি কাজ থাকতো তাহলে কোনও যুবক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে বিদেশে যেত না। সেই দিকে সরকারের কোনও নজর নেই।’
বিএনপির এই নেতার ভাষ্য, ‘দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে তাহলে আইনের শাসনও থাকে না, জবাবদিহি থাকে না। যখন গণতন্ত্র থাকে না তখন সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে, লাগামহীন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে টানাটানি পড়ে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘অবিচারের প্রথম শিকার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, দ্বিতীয় শিখার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমার অপেক্ষায় আছি, আমাদের অনেককে জেল দিয়েছেন, সাজা দিয়েছেন। আমাদের জেলে দেবেন, সাজা দেবেন, কারাগারে দেবেন। তারপরও আমার মনে হয় আপনাদের শেষ রক্ষা হবে না।’
যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামসহ যুব দলের নেতারা।