https://public-voice24.com/wp-content/uploads/2022/03/favicon.ico-300x300.png
ঢাকাবুধবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

রুশ বাহিনীকে রুখতে দুর্গে পরিণত হয়েছে কিয়েভ

পাবলিক ভয়েস
মার্চ ১২, ২০২২ ৫:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রুশ বাহিনী রাজধানী কিয়েভে পুনরায় বোমাবর্ষণ জোরদার করার পর ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, কিয়েভ ‘লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত’। তারা বলছেন, ইউক্রেনের প্রতিটি রাস্তা ও বাড়িকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে বলছেন, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধে ‘একটি অকল্পনীয় ট্র্যাজেডি’ শুরু হতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে কিয়েভ ও গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনীয় শহরে বিমান হামলার সতর্ক সংকেত (সাইরেন) ও গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। পশ্চিমা প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলছেন, রাজধানী কিয়েভের আশেপাশে শক্তিশালী অবস্থান নিতে শুরু করেছে হামলকারী রাশিয়া।

মাইকোলাইভ, নিকোলায়েভ ও ক্রোপিনিতস্কি ও ডনিপ্রো শহরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক জানান, রাজধানী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। শহরটি অবরোধের মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছেন। শহরের চেকপয়েন্টগুলো প্রস্তুত এবং সাপ্লাই লাইন গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে কিয়েভ।

ম্যাক্সার টেকনোলজি শনিবার যেসব স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে সেগুলোতে দেখা গেছে কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে শহরের দিকে রুশ সেনাবাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। আগানোর পথে রুশ সেনাদের কামানের গোলায় আশেপাশের বাড়ি ও ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

শুক্রবার পেন্টাগনের ব্রিফিংয়ে এক সিনিয়র মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, কিয়েভ অভিমূখে রুশ বাহিনী পূর্ব দিক থেকে আগাতে শুরু করেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার সকালে জানিয়েছে, কিয়েভের প্রাণকেন্দ্র থেকে রুশ বাহিনী ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এছাড়া খারকিভ, চেরনিহিভ, সামি, মারিউপোল ঘিরে রেখে ও অবিরাম বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা।

তবে মার্কিন থিংকট্যাংক ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার-এর মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় কিয়েভ ঘিরে রাশিয়ার অভিযান মূলত স্থবির ছিল। এই স্থবিরতার কারণ ছিল সরবরাহ ও ফ্রন্টলাইন ইউনিটকে পুনরায় সজ্জিত করা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনীয়দের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন কিয়েভের মানুষের জীবনমান মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে গ্যাস, উষ্ণতা ও পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণে।

তিনি দাবি করেছেন, চলমান সংঘাতে একটি কৌশলগত টার্নিং পয়েন্টে পৌঁছেছে ইউক্রেন। বলেন, স্বাধীন ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ঠিকিয়ে রাখতে আমাদের কতদিন সময় লাগবে তা বলা মুশকিল। কিন্তু আমরা বলতে পারি যে, এটি আমরা করবই। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের লক্ষ্য, আমাদের বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

কিয়েভের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ২০ লাখ মানুষ শহর ছেড়েছেন বলে শুক্রবার মেয়র ভিটালি ক্লিটস্কো জানিয়েছেন। তিনি জানান, যারা রয়ে গেছেন তারা শহরের প্রতিরক্ষার জন্য কাজ করছেন।

মেয়র ভিটালি ক্লিটস্কো বলেন, প্রতিটি রাস্তা, প্রতিটি ঘরকে দুর্গ বানানো হয়েছে। এমনকি যেসব মানুষ কখনও নিজেদের পোশাক পাল্টানোর কথা ভাবতেন না তারাও উর্দি পরে মেশিন গান হাতে নিচ্ছেন।

বিভিন্ন শহরে বেসামরিকদের ওপর হামলা ও অবিরাম বোমাবর্ষণে অকল্পনীয় ট্র্যাজেডির বিষয়ে সতর্ক করছেন পর্যবেক্ষকরা। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে বলে নতুন শঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্সের স্টিফেন কর্নিশ বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে একটি অকল্পনীয় ট্র্যাজেডির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এখনও তা এড়ানোর সময় আছে। আমাদের অবশ্যই এমনটি এড়াতে হবে।