খুলনায় জেসমিন নাহার হত্যা মামলায় প্রেমিক আসাদ সরদার ওরফে আসাদুজ্জামান সরদার ওরফে আরিফের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ মার্চ) খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসাদ বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল সরদারের ছেলে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- অনুপম মহলদার, সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকিন, শেখ ফরহাদ আহম্মেদ ও মো. আব্দুল হালিম।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর খুলনার বয়রা এলাকার রাশেদ মল্লিকের মেয়ে জেসমিন নাহার নিখোঁজ হন। ঘটনার দুদিন পর বয়রার হাজি ফয়েজ উদ্দিন রোডের দাস পাড়ার মো. সিদ্দিক হেলালের পারিবারিক কবরস্থান থেকে জেসমিন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় মামলা করেন।
২০১৬ সালের ১০ জুন উল্লেখিত আসামিদের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ গোলদার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ জানান, হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস আগে আসাদ নামে এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর বিকেলে আসাদের সঙ্গে দেখা করতে বয়রা বন বিভাগ অফিসের সামনে আসেন নাহার। সেখান থেকে তকে নেওয়া হয় সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহরের বাড়িতে। ওইখানে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন আসাদ। রাজিও হন জেসমিন। সুযোগ বুঝে আসাদ তাকে কুপ্রস্তাব দেন। তাতে সাড়া না দেওয়ায় তার জীবনের কাল হয়। প্রথমে তকে গ্রিলের সঙ্গে ধাক্কা দেওয়া হয়। আঘাতে জেসমিনের মাথা ও নাক ফেটে যায়। সে সময় চিৎকার করলে আসাদ জেসমিনের মুখ হাত দিয়ে চেপে রাখেন। সঙ্গে তার তিন বন্ধু জেসমিনের হাত ও পা চেপে রাখেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হলে পাটের তৈরি বস্তা ও নীল রংয়ের পলিথিন দিয়ে তার নাহারের মরদেহ পেঁচিয়ে বড় বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের একটি কবরস্থানে ফেলে আসেন তারা।
এ আইনজীবী বলেন, মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ নিহত নাহারের প্রেমিক আসাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া মামলা থেকে চারজনকে খালাস দেন বিচারক।