ভারতের উত্তর প্রদেশে গরু পাচারের গুজবে এক মুসলিম পিক-আপ ভ্যানচালককে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। রোববার (২০ মার্চ) রাতে রাজ্যের মাথুরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। একদল গ্রামবাসী নিরীহ ভ্যানচালকের ওপর চড়াও হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি মাথুরার গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা। পিক-আপ ভ্যানে করে পশুর মৃতদেহ পরিবহনের কাজ করছিলেন তিনি।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, উন্মত্ত জনতা লোকটিকে গালিগালাজ ও মারধর করছে। তারা ওই লোকের শার্ট ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তিনি বার বার হাত জোর করে দয়া ভিক্ষা চান। কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে চামড়ার বেল্ট দিয়ে মারতে থাকে। এদের মধ্যে শুধু একজনকে হামলা থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়, যদিও বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী তাকে সরিয়ে দেন।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রামবাসী ভ্যানের ভেতর পশুর হাড় ও মৃতদেহ দেখতে পেয়ে গাড়িটি আটক করে। এরপর সবাই মিলে ওই ভ্যান চালককে গোমাংস পরিবহন ও গরু পাচারের সন্দেহে বন্দী করার পর মারধর করেন।
তবে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গাড়িটি মূলত পশুদের মৃতদেহ সৎকার করার জন্য গ্রামের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছিলো। গাড়িতে কোনো গরু বা গরুর মাংস ছিল না জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। এ বিষয়ে মাথুরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রকাশ সিং বলেন, রামেশ্বরের কাছে পশুর মৃতদেহ সৎকারের জন্য জেলা পঞ্চায়েতের লাইসেন্স ছিল ওই ব্যক্তি। আমাদের প্রাথমিক তদন্তে গাড়িতে কোনো গরু বা গরুর মাংস পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। এতে ডানপন্থী গোষ্ঠীর কিছু সদস্যসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।